
দেশের জুয়েলারি শিল্পে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, শৃঙ্খলা ও ব্যবসার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে এখন থেকে স্বর্ণালংকার কেনার রশিদের কপি থাকতে হবে। মূল মালিক ছাড়া অন্য কোনো প্রতিনিধির কাছ থেকে অলংকার কেনা যাবে না এবং বিক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপির উভয় পাশের ফটোকপি রাখতে ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।সোমবার সারাদেশে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের এ সতর্কীকরণ নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।




গত ৩ সেপ্টেম্বর সারাদেশে বাজুস সদস্যদের মাঝে ‘স্বর্ণ ক্রয় সতর্কীকরণ নোটিশ’ জারি করেছে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন অ্যান্টি স্মাগলিং অ্যান্ড ল’ এনফোর্সমেন্ট। সব ধরনের স্বর্ণ কেনা-বেচার ক্ষেত্রে ক্রেতা ও বিক্রেতাকে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য সংশ্লিষ্টদের বিনীত অনুরোধ জানায় বাজুস।




সতর্কীকরণ নোটিশে বাজুস বলেছে, বাজুস সদস্যরা প্রয়োজনের তাগিদে দেশি-বিদেশি বা পুরাতন-নতুন স্বর্ণালংকার কিনে থাকেন। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে নানাবিধ আইনি জটিলতার সম্মুখীন হন। একাধিকবার সতর্ক করা সত্ত্বেও কোনো কোনো ব্যবসায়ী পুরাতন বা ব্যাগেজ রুলের স্বর্ণ ক্রয় করে নানারকম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।




এ ধরনের সমস্যা থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে কিছু নিয়ম-কানুন অনুসরণ করতে নির্দেশনা দিয়েছে বাজুস। নির্দেশনাগুলো হলো-বিক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপি থেকে নিজ দায়িত্বে উভয় পাশের ফটোকপি রাখতে হবে। বিক্রেতার বিক্রয়কৃত স্বর্ণালংকারের উৎস সম্পর্কে জানতে হবে। বিক্রেতার স্বর্ণালংকারের ক্রয় রশিদের কপি থাকতে হবে। মূল মালিক ব্যতীত কোনো প্রতিনিধির কাছ থেকে অলংকার কেনা যাবে না।




ব্যাগেজ রুলের আওতায় আনা স্বর্ণ ক্রয়ের ক্ষেত্রে যেসব সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বিক্রেতার পাসপোর্টের মূল কপি থেকে নিজ দায়িত্বে ফটোকপি করে রাখতে হবে। বিক্রেতা যে দেশ থেকে স্বর্ণ নিয়ে এসেছেন সেই দেশের ভিসার কপি এবং এক্সিট ও এন্ট্রির সিলের কপি রাখতে হবে (মূল কপি থেকে নিজ দায়িত্বে ফটোকপি করে রাখতে হবে, এক্ষেত্রে বিক্রেতার কাছ থেকে উল্লেখিত ডকুমেন্টের কোনো ফটোকপি নেওয়া করা যাবে না)। বিক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপি থেকে নিজ দায়িত্বে উভয় পাশের ফটোকপি রাখতে হবে।




এছাড়া প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে স্বর্ণ কিনতে হবে। এয়ারপোর্টে ডিক্লিয়ারেশন বা ট্যাক্সের আওতায় থাকলে ট্যাক্স প্রদানের ডকুমেন্ট (মূল কপি) সংরক্ষণ করতে হবে। প্রয়োজনে বিক্রেতার পরিচয় যাচাই-বাছাই করতে হবে। পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ট্যাক্স-পে (পিওর গোল্ড ক্রয়ের ক্ষেত্রে) একই নাম, ঠিকানা আছে কিনা, তা যাচাই করে নিতে হবে।




একজন যাত্রী বিদেশ থেকে দেশে আগমনকালে ব্যাগেজ রুলের আওতায় পণ্য আনার যে সুবিধা পায় তা তার ব্যক্তিগত বা পরিবারের সদস্যদের ব্যবহারের জন্য। তবে অর্থের প্রয়োজনে পণ্যটি বিক্রি করার ইচ্ছা পোষণ করলে উল্লেখিত তথ্যাদি বা ডকুমেন্ট প্রাপ্তি সাপেক্ষে সেই স্বর্ণ কেনা যাবে। সকল ক্ষেত্রে ক্রয় রশিদ দিতে হবে এবং বিক্রেতার স্বাক্ষরযুক্ত ক্রয় রশিদের কপি নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে ৩ (তিন) বছর সংরক্ষণ করতে হবে।
বিক্রেতা যদি বর্ণিত তথ্য দিতে না পারেন, তাহলে বুঝতে হবে সেটা অবৈধ স্বর্ণ। তাই এ ধরনের বিক্রেতার কাছে থেকে স্বর্ণ ক্রয় করা থেকে বিরত থাকতে হবে ব্যবসায়ীদের। বারবার সতর্ক করার পরও কোনো জুয়েলারি ব্যবসায়ী যদি অবৈধ স্বর্ণ কিনে আইনি ঝামেলার সম্মুখীন হলে বাজুস তাকে কোনো সহযোগিতা করবে না।